শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ অপরাহ্ন
ভযেস নিউজ ডেস্ক:
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় নদী পাড় হতে গিয়ে নৌকা ডুবে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে আরও অর্ধশতাধিক। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু ও নারী উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ সোমবার (২৬ সেপ্টম্বের) সকালে পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
রবিবার (২৫ সেপ্টম্বের) দুপুর আড়াইটার সময় মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয় ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জয়শ্রী রানী রায়কে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর কুমার রায় জানান, নৌকাডুবিতে হতাহতের বিষয়ে তথ্য পেতে ৬ নম্বর মাড়েয়া বামন হাট ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে জরুরি তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে এসি ল্যান্ড : ০১৭০৮৩৯৭৭১৮, জাকির : ০১৭১৯৩৪৭১৭৩ এই নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নদীর অন্য পাড়ে বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বরদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। এ ধর্মসভায় যোগ দিতে গতকাল দুপুরে করতোয়া পার হওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ওই নৌকার যাত্রীরা। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নদীর মাঝপথে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেকে সাঁতার জানায় তীরে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা বিশেষ করে নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে মারা যায়।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বদেশ্বরী মন্দিরে ধর্মসভায় যোগ দিতে পঞ্চগড়ের বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও অন্য এলাকার লোকজন শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে নদী পার হচ্ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীর তোলার কারণে মাঝনদীতে নৌকাটি উল্টে গিয়ে ডুবে যায়। সাঁতার জানা যাত্রীরা তীরে উঠে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা নারী ও শিশুরা ডুবে যায়। তাদের চিৎকারে আশপাশের এলাকার লোকজন ছুটে এসে অনেককে উদ্ধার করে। পরে পুলিশ, প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। এরপর উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নৌকা পারাপারের জন্য ঘাটে চারটি নৌকা থাকে। মন্দিরগামী যাত্রীর চাপ থাকার কারণে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয় নৌকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত দুদিন প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ফলে উজানের ঢলে নদীর পানি বেড়ে গেছে। আর নৌকাটি ডুবেছে মাঝনদী বরাবর। এতেই প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, মৃত ব্যক্তি সৎকারের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যেককে ২০ হাজার এবং আহতদের প্রত্যেককে ১০ হাজার করে টাকা অনুদান দেওয়া হবে।
আহতদের উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
স্বজনদের খোঁজ নিতে অনেকেই নদীপাড়ে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। শোকার্তদের আহাজারি চলছে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও যুক্তরাষ্ট্রে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌকাডুবিতে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক জানিয়েছেন। তারা নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন। এ ছাড়া শোকবার্তা দিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
ভয়েস/আআ